Aurora Health Tips

Expert advise from Aurora Specialist

শ্বেতরোগ

শ্বেতরোগ

শ্বেতরোগ সাধারণত শরীরের কোনো বিশেষ স্থানের ত্বকের রং উৎপাদনকারী কোষ বা মেলানোসাইটরোগাক্রান্ত হলে বা সংখ্যায় কমে গেলে অথবা মরে গেলে মেলানিন নামক ত্বকের রঞ্জক(রং)তৈরি বন্ধ হয়ে যায় এবং ওই নির্দিষ্ট স্থানে সাদা দাগ পড়ে। নারী কিংবা পুরুষ যে কোনো বয়সেই এই শ্বেতী রোগে আক্রান্ত হতে পারে। শ্বেতী কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয় বা প্রানঘাতি নয়।শ্বেতী রোগের চিকিৎসা সময়সাপেক্ষ। বিজ্ঞানীরা এই রোগের কারণ এখনও জানতে পারেননি। বিশ্বে ১০ কোটি মানুষ বর্তমানে এ রোগে আক্রান্ত। দেহের লোমশ অংশের চিকিৎসা অনেকটাই সফল হয়। কিন্তু যেসব জায়গায় লোম থাকে না, যেমন আঙুল, ঠোঁট ইত্যাদির চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। 


শ্বেতরোগের কারণ
এটি কোন বিপজ্জনক রোগ নয়। শ্বেতরোগের নির্দিষ্ট কোন কারণ এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তবে নিম্নলিখিত কারনে এ রোগ হতে পারেঃ
- বংশগত কারনে কারো কারো ক্ষেত্রে এই রোগ হতে পারে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে কয়েক প্রজন্ম পরেও এ রোগ হতে দেখা যায়। 
- প্রসাধনী সামগ্রীতে ব্যবহৃত ক্যামিক্যাল বা সিন্থেটিক জাতীয় জিনিস থেকে এলার্জিক প্রতিক্রিয়ায় শ্বেতী হতে পারে।চশমার ফ্রেম বেশি আঁটসাঁট হলে তা থেকে নাকের দু’পাশে বা কানের কাছে সাদা হতে পারে।
- শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি থাকলে হতে পারে।
- রোদে ত্বক পুড়ে যাওয়া অথবা মানসিক চাপ থেকে হতে পারে।
- অনেক ক্ষেত্রে কপালে পড়ার সিন্থেটিক টিপ থেকেও শ্বেতীর শুরু হতে পারে।
- দীর্ঘ দিন ধরে প্লাস্টিক বা রাবারের জুতা, ঘড়ি প্রভৃতি ব্যবহারের ফলেও শ্বেতী বা অন্যান্য চামড়ার সমস্যা হতে পারে।


লক্ষণ ও উপসর্গসমূহ
- শ্বেতরোগের লক্ষণ ও উপসর্গ দেখে সহজেই এই রোগের উপস্থিতি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। যেমন: ত্বকের উপর সাদা দাগ পড়বে,
- অল্প বয়সে মাথার চুল, চোখের পাপড়ি, ভ্রু অথবা দাড়ি সাদা বা ধূসর হয়ে যাবে,
- মুখের ভিতরের কলাগুলো বর্ণহীন হবে অথবা চোখের ভিতরের অংশে রংয়ের পরিবর্তন হলে বা রংহীণ হলে ধরে নিতে হবে ঐ ব্যক্তি শ্বেত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।


চিকিৎসা
আমরা চিকিৎসা দুইভাবে করি। একটি মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট, আরেকটি সার্জিক্যাল। শ্বেতী রোগটি নির্ণয় করা হয় খুব সহজ একটি পরীক্ষা যার নাম উডস ল্যাম্প ।তা ছাড়া যদি কোনো সন্দেহ থাকে, আমরা ত্বক বায়োপসি করে থাকি। আরো কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করি।মেডিক্যাল ট্রিটমেন্টের পাশাপাশি কিছু থেরাপী দেয়া হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ফটোথেরাপী ও এক্সাইমার সিস্টেম। সার্জিক্যাল ট্রিটমেন্টের মধ্যে আমরা এপিডারমাল গ্রাফটিং, পাঞ্চ গ্রাফটিং এবং নন-কালচারড মেলানোসাইট ট্রান্সফার করে থাকি। নন-কালচারড মেলানোসাইট ট্রান্সফার সার্জারীতে আমাদের সফলতার হার অধিক।


উডস ল্যাম্প টেস্ট কি?
উডস ল্যাম্প হলো একধরনের  বেগুণী আলোকরশ্মি যার মাধ্যমে সাদা হয়ে যাওয়া অংশটি শ্বেত কিনা তা নির্ধারন করা হয়। একটি অন্ধকার কক্ষে এই ল্যাম্পটির আলো ত্বকের আক্রান্ত স্থানে ফেলা হয় এবং যদি কোনও রোগীর ভিটিলিগো থাকে, তখন উডসল্যাম্পের আলো সমস্ত সাদা দাগকে উজ্জ্বল সাদা করে তোলে, সাধারণ ত্বকের বর্ণ খুব কম ফ্যাকাশে হলেও তার ত্বকের রঙের বিপরীতে পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান করে তোলে।


ফটোথেরাপী (NB-UVB) কি?
ফটোথেরাপী শ্বেতরোগকে নিয়ন্ত্রনে রাখে,এটি একটি নিরাপদ থেরাপী। ছোট-বড় সকল বয়সের শ্বেতরোগে আক্রান্ত রোগী ডাক্তারের পরামর্শানুযায়ী এই থেরাপী নিতে পারে। সাধারনত সপ্তাহে ২/৩ দিন এই থেরাপী নিতে হয়। এই্ থেরাপীতে রোগীরা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখতে পান।


নন–কালচারড মেলানোসাইট ট্রান্সফার কি?
আমরাই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম নন-কালচারড মেলানোসাইট ট্রান্সপ্লান্ট বাংলাদেশে নিয়ে এসেছি। এই সার্জারীতে আমরা সর্বাধিক সফলতা অর্জন করেছি। এই সার্জারীটি করার জন্য শ্বেত স্থানটি কমপক্ষে ১ বছর স্টাবেল হতে হয়, অর্থ্যাৎ একই জায়গায় থাকতে হয়।